যারা এইচএসসি ভর্তি রেজাল্ট ২০২০ দেখার জন্য এখানে এসেছেন তাদের সবাইকে স্বাগতম। আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমরা সবাই জানি আগের মত এখন আর ভর্তির জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয় না কেবলমাত্র কিছু কলেজ ছাড়া। এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট এর উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কলেজে ভর্তির সুযোগ হয়ে থাকে। ভর্তির সময় সাধারনত পছন্দের ১০টি কলেজ নির্বাচন করতে হয়। ভর্তির রেজাল্ট দেয়ার পর কলেজ সমূহের শর্তের ভিত্তিতে বিভিন্ন কলেজে ভর্তির সুযোগ হয়ে থাকে। আজ আপনাদের জানাতে চলেছি যেভাবে আপনি আপনার ভর্তির রেজাল্ট দেখতে পারবেন। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয়ে চলে যাই।
ভর্তির যোগ্যতা
সাধারন বোর্ড থেকে যারা ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে এসএসসি পাশ করেছে এবং উন্মক্ত বিশ্ববিদ্যলয়ের অধীনে যারা ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে এস এস সি বা সমমানের পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হয়েছে সেসব শিক্ষার্থীগন ২০২০ সালের শিক্ষাবর্ষে নীতিমালার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে কোন কলেজে বা সমমানের প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেনীতে বর্তির যোগ্য হিসেবে বিসেচিত হবে। তবে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স হবে সর্বোচ্চ ২২ বছর।
বিদেশি কোন শিক্ষা বোর্ড বা অনুরূপ কোন প্রতিষ্ঠান হতে সমমানের পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড হতে তাদের সনদের মান নির্ধারণের পর ভর্তির যোগ্য হসেবে বিবেচিত হবে।
- বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উর্ত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগন বিজ্ঞান, মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের যে কোন একটিতে ভর্তি হতে পারবে।
মানবিক বিভাগ থেকে উর্ত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগন মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের যে কোনটিতে ভর্তি হতে পারবে। - ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উর্ত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগন ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগ এর যে কোনটিতে ভর্তি হতে পারবে।
- গার্হস্থ্য অর্থণীতি ও সংগীত বিভাগে যে কোন বিভাগ থেকে উর্ত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগন ভর্তি হতে পারবে।
প্রার্থী নির্বাচনের পদ্ধতি
ভর্তির জন্য কোন বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে না। কেমলমাত্র শিক্ষার্থীর এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।
বিভাগীয় এবং জেলা সদরের কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ১০০% আসন সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে যা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে। মেধার ভিত্তিতে ভতিৃর পরে যদি কোন শিক্ষার্থী বিষেশ কোটার অধিনে থাকে তাহলে তাদের জন্য অতিরিক্ত মোট ১১ শতাংশ সংরক্ষিত থাকবে।
সমান জিপিএ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে।
বিজ্ঞান বিভিগে ভর্তির জন্য সমান নম্বর প্রাপ্তদের মেধাক্রম নির্ধারণের জন্য সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত অথবা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করা হবে। এরপরও যদি মেধাক্রম নির্ধারন করা সম্ভব না হয় তাহলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, পদার্থ বিজ্ঞান, রাসায়নে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করা হবে।
এক বিভাগের প্রার্থী অন্য বিভাগে ভর্তির জন্য মোট জিপিএ একই হলে সর্বমোট নম্বর বিবেচনা করা হবে। প্রয়োজনে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করা হবে।
এ নীতিমালায় যা কিছুই থাকুক না কেন স্কুল এন্ড কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান হতে উর্ত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগন অগ্রাধিকার পাবে। নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ভর্তির পরে কেবল অবশিষ্ঠ শূন্য আসনে অন্যান্য প্রার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে।
কোন কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠান ভর্তির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করতে পারবে।
কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানকে তাদের ভর্তি সংক্রান্ত সকল তথ্য ওয়েবসাইট এবং নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করতে হবে।
একাদশ শ্রেনীতে ভর্তির ফলাফল
সাধারনত ভর্তির ফলাফর কয়েকটি ধাপে প্রকাশ করা হয়। ১ম পর্যায়, ২য় পর্যায় ও ৩য় পর্যায় এই তিনটি ধাপে ফলাফল প্রকাশ হয়। পাশাপাশি মাইগ্রেশনের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সকল ভর্তি ফলাফলের তারিখ ও সময় নিচে দেয়া হলো-
- ১ম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ: ১০/০৬/২০২০
- পছন্দক্রম অনুযায়ী ১ম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ: ২১/০৬/২০২০
- ২য় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ: ২১/০৬/২০২০
- পছন্দক্রম অনুযায়ী ২ম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ: ২৫/০৬/২০২০
- ৩য় পর্যায়ে নির্বাচিত আবেদনের ফল প্রকাশ: ১৫/০৬/২০২০
এইচএসসি পরীক্ষার ভর্তির ফলাফল কয়েকটি উপায়ে দেখা সম্ভব। প্রতিটা উপায় নিচে আলোচনা করা হলো।
ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ফলাফল পাওয়ার উপায়
একাদশ শ্রেনীর ভর্তির ফলাফল দেখার জন্য প্রথমে www.xiclassadmission.gov.bd ওয়েব সাইটে যেতে হবে। সেখান থেকে লগিং অপশনে ক্লিক করতে হবে। আবেদনের সময় প্রাপ্ত ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিং করতে হবে। লগিং করার পরে আপনি আপনার পছন্দকৃত তালিকা থেকে দেখতে পাবেন আপনি কোন কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট থেকে ফলাফল দেখুন
শিক্ষাবোর্ডের নিয়ম অনুসারে প্রতিটা কলেজ বা সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ ওয়েব সাইট ও কলেজের নোটিশ বোর্ডে মেধাক্রম তালিকা প্রকাশ করতে হবে। আপনি চাইলে কলেজের নোটিশ বোর্ড থেকে সরাসরি ফলাফল দেখে নিতে পারবেন। অন্যদিকে যদি আপনি প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট থেকে ফলাফল দেখতে চান তাহলে প্রথমে গুগলে গিয়ে প্রথমে আপনার কলেজের নাম লিখে সার্চ করুন। পরবর্তিতে কলেজের ওয়েব সাইটে গিয়ে নোটিশ সেকশন বা রেজাল্ট সেকশনে ক্লিক করুন। ফলাফলের পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে আপনি আপনার রেজাল্ট দেখতে পাবেন।
এসএমএস এর মাধ্যমে ফলাফল দেখার উপায়
এস এম এস এর মাধ্যমে কলেজে ভর্তির ফলাফল দেখতে হলে আপনাকে তেমন কিছুই করতে হবে না। আপনি যদি কোন প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত হয়ে থাকেন তাহলে আবেদনের সময় আপনি যে টেলিটক নম্বরটি দিয়েছেন সেটিতে প্রতিষ্ঠান থেকে মেসেজের মাধ্যমে আপনার ফলাফল জানিয়ে দেয়া হবে। তাই ফলাফল দেখার জন্য এদিক সেদিক ছোটাছুটির দরকার হবে না।
ভর্তি ফি
প্রতিষ্ঠান সমূহকে বোর্ড কর্তিক নির্ধারিত ভর্তি ফি, অন্যান্য ফি, ভর্তির যোগ্যতা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ড ও ওয়েব সাইটে প্রকাশ করতে হবে।
বোর্ডের অনুমতি ছাড়া নির্ধারিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।
প্রার্থীদের মেধাক্রম তালিকা কলেজের নোটিশ বোর্ড ও ও কলেজের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করতে হবে।
প্রর্থীদেরকে মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বা নম্বরপত্র এবং যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রার্থী এসএসসি বা সমমানের পাশ করেছে সেই প্রতিষ্ঠানের ইস্যুকৃত প্রশংসাপত্র দাখিল করতে হবে।
সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি উপজেলা পর্যায়ে ১০০০ টাকা, জেলা সদরে ২০০০ টাকা, ঢাকা ব্যতীত অন্যান্য মেট্রোপলিটান এলাকায় ৩০০০ টাকার বেশি হবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটান এলাকায় অবস্থিত এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ ভর্তির জন্য ৫০০০ টাকার বেশি অর্থ আদায় করতে পারবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটান এলকায় অবস্থিতি আংশিক এমপিও বা এমপিও বহির্ভূত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভর্তির জন্য ৯০০০ টাকা। ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ১০০০০ টাকা গ্রহন করতে পারবে।
সরকারী কলেজ সমূহ সরকারী নিয়ম অনুসারে প্রয়োজনীয় ফি সংগ্রহ করবে।
কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিকৃত কোন ছাত্র ছাত্রীর ছাড়পত্র ইস্যু করা যাবে না। কিংবা বোর্ডের অনুমতি ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠানের ইস্যুকৃত ছাড়পত্রের বরাতে ভর্তি করা যাবে না। তবে সরকারী বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকুরিজীবীদের বদলিজনিত কারনে বোর্ডের কোন পূর্বানুমতি নেয়ার প্রয়োজন হবে না। এরূপ ক্ষেত্রে বদলিকৃত কর্মচারির বদলির আদেশপত্র প্রদর্শন করে প্রতিষ্ঠান হতে ছাড়পত্র নেয়া যাবে। এরূপ ভর্তির জন্য ছাত্র ছাত্রীর ভর্তির ১৫ দিনের দিনে মধ্যে রেজিষ্ট্রেশন ফি সহ প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে জমা দিতে হবে।
কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোন অবস্থাতেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান হতে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ কোন শিক্ষার্থীর মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট উক্ত শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবক ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তর করা যাবে না বা অন্য কোন অজুহাতে কোন শিক্ষার্থীর একাডমিক ট্রান্সক্রিপ্ট আটক রাখা যাবে না।
আজকের লেখাটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই লেখাটি আপনার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে রাখুন। কেননা আপনার শেয়ারের মাধ্যমে হয়তো আপনার বন্ধু বান্ধব উপকৃত হবে। সব সময় রেজাল্ট কিটের সাথেই থাকুন। কোন পরামর্শ থেকে থাকলে অব্যই কমেন্ট করে দিন। নিয়মিত আমাদের সকল তথ্য পেতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন। এমনকি আপনি আমাদের সাথে যুক্ত থাকতে চাইলে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।